লতিবুর রহমান: নেত্রকোণার বারহাট্টায় সাড়ে ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন মডেল মসজিদের একটি ‘গ্রেট ভিম’ রোববার রাতে ভেঙ্গে পড়েছে। তদারকির ঘাটতি, অপর্যাপ্ত ও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার এবং রডের যথাযথ বাঁধাই না হওয়ায় মসজিদটি নির্মাণের মাঝপথে এই ত্রুটি ধরা পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, শুরু থেকেই নির্মাণকাজে গাফিলতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। ঠিকাদার অপর্যাপ্ত ও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করছে। কলাম ও ভিমে দশ মিলি রড ব্যবহার করা হয়েছে, সিমেন্ট অপর্যাপ্ত। সকল রড মরিচা ধরা। নির্মাণের পর থেকে কিউরিং চোখে পড়ে নাই।
সরকারি প্রকৌশলীরা মাঝে মাঝে আসলেও ঠিকাদারের লোকজনের সাথে কথা বলে চলে যান বলে স্থানীয়রা এই প্রতিনিধিকে জানান। বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস. এম. মাজহারুল ইসলাম নির্মাণাধীন মসজিদের তিন তলায় উপস্থিত হন। উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ—দপ্তর সম্পাদক মো. শহীদুর রহমান, উপজেলা দুনীর্তি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মো. নূর উদ্দিন, বারহাট্টা হাফিজিয়া মাদ্রাসার মোহতামিম মাওলানা আনোয়ারুল হক, রাজনীতিক ব্যক্তিত্ব শামছ উদ্দিন আহমেদ বাবুল, সমাজকর্মী মতিশ চন্দ্র সরকার নান্টুসহ অনেকেই বলেন, রোববার সন্ধ্যা রাতে হঠাৎ বিকঠ আওয়াজ শুনে আমরা ভয় পেয়ে যাই। পরে জানতে পারি যে, নির্মাণাধীন মডেল মসজিদের তিনতলার দক্ষিণ পাশের একটি গ্রেট ভিম ভেঙ্গে পড়েছে। আমরা সবাই ঘটনাস্থলে যাই ও আফসোস করি।
এ সময় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ করা সাইট ইঞ্জিনিয়ার (ডিপ্লোমা) আনোয়ার হোসেন ঘটনাস্থলে এসে ছবি তুলতে নিষেধ করেন। তার কথা উপেক্ষা করে অনেকেই ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট দেন। উপস্থিত স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদে আনোয়ার হোসেন প্রকল্পের ডিজাইন ও নির্মাণ ত্রুটির কথা স্বীকার করেন। এ সময় স্থানীয়রা ভেঙ্গেপড়া ভিমটি না সরানো এবং যেভাবে আছে সেভাবেই রাখার জন্য আনোয়ার হোসেনকে বলেন। কিন্তু সোমবার সকালে গিয়ে ভেঙ্গে পড়া ভীমের কোন চিহ্নই পাওয়া যায় নাই। আশপাশের লোকজন জানায়, ভেঙ্গে পড়া গ্রেট ভিমটি গভীর রাতে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। উপস্থিত স্থানীয়দের সবাই বলেন, মডেল মসজিদের সকল কাজে অপর্যাপ্ত রড—সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়েছে।
যে কারণে নির্মাণ শেষ হওয়ার আগেই ভিম ভেঙ্গে পরেছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ইঞ্জিনিয়ার আনোয়ার হোসেন সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, প্রকল্পের প্ল্যান—ইস্টিমেট অনুয়ায়ী কাজ করা হচ্ছে। নির্মাণকাজে উন্নতমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস. এম. মাজহারুল ইসলাম বলেন, মডেল মসজিদটির নির্মাণকাজে ক্রটির ব্যাপারে অনেকেই আমার কাছে অভিযোগ করেছেন। আমি দুইদিন পরিদর্শনে এসেছি, সাইট ইঞ্জিনিয়ারকে পাই নাই। বিষয়টি ডিসি স্যারকে অবগত করেছি। গ্রেট ভিম ভেঙ্গে পড়ার বিষয়টিও জানিয়েছি। স্যার তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।এস/জ
Leave a Reply