মো: শফিকুল ইসলাম: নেত্রকোণা পৌরসভার প্রাণকেন্দ্র অবস্থিত প্রস্তাবিত ‘বঙ্গবন্ধু কলেজ’ এর নাম ২৫ বছরেও চূড়ান্ত হয়নি। প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজও ‘চন্দ্রনাথ কলেজ’ নামে পরিচালিত হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম। জানা গেছে, ১৯৯৭ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি, তিনবারের সাবেক এমপি ও বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহচর এ্যাডভোকেট মরহুম ফজলুর রহমান খানের উদ্যোগে এ কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি রক্ষায় তখন কলেজটির নাম রাখেন ‘বঙ্গবন্ধু কলেজ’। কিন্তু কলেজটি প্রতিষ্ঠার পর নিজস্ব জমি না থাকায় ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরামর্শে শহরের চন্দ্রনাথ উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি ভবনে ‘চন্দ্রনাথ স্কুল ও কলেজ’ নামে এটির পাঠদানের অনুমতি দেয়া হয়। পরবর্তীতে ১৯৯৮ সালে কলেজের গভর্নিং বডির সভায় ‘চন্দ্রনাথ স্কুল ও কলেজ’ এর বদলে ‘বঙ্গবন্ধু কলেজ’ নামকরণের প্রস্তাব গৃহীত হয়।
আরও জানা গেছে, ১৯৯৯ সালে কলেজটির অনুকূলে নেত্রকোণা পৌরসভার প্রাণকেন্দ্রের আমতলা রোডসংলগ্ন ইসলামপুর মোড় এলাকায় ৩ একর জায়গা বরাদ্দ দেয়া হয়। পরে ২০০০ সালে পৃথকীকরণ করে কলেজটি নিজস্ব জায়গায় ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠা করে। তখনকার খাদ্যমন্ত্রী আলহাজ্ব আমির হোসেন আমু এমপি কলেজ ভবনের উদ্বোধন করেন। সেই থেকে নিজস্ব জায়গায় কলেজটির কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। কিন্তু ‘বঙ্গবন্ধু কলেজ’ নামটি আজও প্রস্তাব আকারেই রয়েছে গেছে। চন্দ্রনাথ কলেজ নামেই পরিচালিত হচ্ছে সব কার্যক্রম। শুধু ব্র্যাকেটে লেখা হচ্ছে ’প্রস্তাবিত বঙ্গবন্ধু কলেজ’। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অমিয় রঞ্জন তালুকদার বলেন, প্রায় ২০ বছর আগে এমপিওভুক্ত হওয়া এ কলেজটিকে স্থানীয়রা বঙ্গবন্ধু কলেজ নামেই চেনেন।
কিন্তু নানা জটিলতায় নামটি চূড়ান্ত করা যাচ্ছে না। কলেজের শিক্ষক—কর্মচারী এবং শিক্ষার্থী ছাড়াও স্থানীয় প্রত্যেকে নামটির পরিবর্তন চান। তিনি উল্লেখ করেন, বর্তমানে কলেজটির ছাত্র—ছাত্রীর সংখ্যা এবং পরীক্ষার ফলাফল খুবই সন্তোষজনক। কলেজের শিক্ষক—কর্মচারীরা জানান, কলেজটিকে ‘বঙ্গবন্ধু কলেজ’ নামে নামকরণের জন্য বর্তমান সরকারের সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আশরাফ আলী খান খসরু এমপি ও সংরক্ষিত আসনের এমপি হাবিবা রহমান খান শেফালী উর্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবরে ডিও লেটার দিয়েছেন। কিন্তু অদ্যাবধি এর কোন উত্তর মেলেনি।
সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: আশরাফ আলী খান খসরু এমপি বলেন, ‘আমি এ প্রতিষ্ঠানটিকে ‘বঙ্গবন্ধু কলেজ’ নামে নামকরণের জন্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট বরাবরেও ডিও লেটার দিয়েছিলাম। কিন্তু বর্তমানে সেটি কি অবস্থায় আছে জানি না। তবে এ ব্যাপারে শীঘ্র খোঁজ নেব।’ সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি হাবিবা রহমান খান শেফালী বলেন, ‘আমার বাবা সাবেক এমপি এ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান খান অনেক স্বপ্ন নিয়ে বঙ্গবন্ধুর নামে এ কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন।
আমি সংসদ সদস্য হওয়ার পর থেকে প্রস্তাবিত নামটি চূড়ান্ত করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। সংসদের বাজেট অধিবেশনেও বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছি। আশা করি কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বিবেচনা করবেন।’ কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি ও নেত্রকোণার জেলা প্রশাসক কাজি মোঃ আবদুর রহমান বলেন, ‘আমরা এ ব্যাপারে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। আশা করছি অতি শীঘ্র প্রস্তাবিত নামটি চূড়ান্ত হবে।’ এস/জ
Leave a Reply