বিশেষ প্রতিনিধিঃ নেত্রকোনার বাহাট্রায় প্রতিবন্ধী তরুণী ধর্ষনের শিকার হয়ে ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হলে এ ব্যাপারে মামলা হয়েছে । এ ঘটনা বারহাট্টা উপজেলার সিংধা ইউনিয়নে এ ঘটে।অভিযুক্ত ইমামের নাম হাফেজ নুর আহম্মদ (৫৭)। তিনি ঐ উপজেলার মল্লিকপুর গ্রামের মৃত মগল মিয়ার ছেলে। আর ঐ ভুক্তভোগী প্রতিবন্ধী যুবতী একই গ্রামের। তবে মামলার খবর পেয়েই গা-ঢাকা দিয়েছেন অভিযুক্ত ইমাম। এলাকাবাসী জানান , হাফেজ নুর আহম্মদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জের শানারপার এলাকায় বসবাস করেন। নিজ বাড়ি নেত্রকোনার বারহাট্টার মল্লিকপুরে তার মা বসবাস করেন।
মাকে দেখতে মাঝে মধ্যে বাড়িতে আসেন তিনি। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বাড়িতে এসে পাশের বাড়ির এক বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মহিলা কে বিভিন্ন কাজের বাহানায় ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করেন। এক পর্যায়ে ঐ স্বামী পরিত্যক্তা মহিলা ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। গত ১১ সেপ্টেম্বর বারহাট্রা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন বাদী, মামলা সূত্রে জানা গেছে, হাফেজ নুর আহম্মদ চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে স্ত্রীকে রেখে একাই গ্রামের বাড়ি মল্লিকপুরে আসেন। গ্রামের মসজিদে রমজানে নামাজ পড়ান। এ সময় বেশ কিছুদিন এলাকায় থাকেন। সেই সময় নানা কাজের জন্য পাশের বাড়ির বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ঐ মহিলা কে ডেকে আনে । এক পর্যায়ে তাকে ধর্ষণ করেন নুর আহমেদ। এলাকাবাসী জানান আগে একবার গ্রামের মসজিদে ইমাম থাকা অবস্থায় এক নারীর সঙ্গে এমন কাজ করে। সেই নারী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে ঘটনা জেনে এলাকাবাসী তাকে মারধর করে গ্রাম থেকে বের করে দেন। পরে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ চলে যান। সেখানে গিয়েও একই কাজ করেন। পরে কয়েক মাসের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় সেই মেয়েকে বিয়ে করে সেখানেই স্থায়ী হন।
তিনি এর আগে ৬-৭টা নারী সংক্রান্ত কেলেংকারি করেছেন বলে এলাকা বাসী উপজেলার সিংধা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বার লালন বখত মজুমদার বলেন, নুর আহম্মদ ইমামতি করলেও তার নারী কেলেংকারির অনেক ঘটনা আছে। বর্তমানে বিদেশে লোক পাঠায়, আদম ব্যবসাও করে। এই প্রতিবন্ধী তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনায় বিয়ে করার কথা বললেও সে নানা ছলচাতুরির আশ্রয় নিয়েছে। এলাকায় কিছু লোকজনকে টাকা পয়সা দিয়ে প্রতিবন্ধী তরুণীর পরিবারকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। এ ঘটনায় তার কঠোর শাস্তি দাবি করেন তিনি।ভুক্তভোগীর মা জানান, প্রথমে নুর আহম্মদকে আমি ঘটনা ফোনে জানাই। জানানোর পর এটি সমাধানে আমাকে আশ্বাসও দেয়। কিন্তু কয়েক দিন যেতেই এলাকার কয়েকজন মানুষকে টাকা পয়সা দিয়ে ম্যানেজ করে আমাকে আর আমার মেয়েকে অপবাদ দিতে শুরু করে। তারা বাচ্চা নষ্ট করার জন্য চাপ দেয়, ভয়ভীতি দেখানো শুরু করে। শেষে বাধ্য হয়ে আইনের আশ্রয় নিয়েছি। এই পরিবারে আমার ৭ সন্তানের মধ্যে ৫ জনই প্রতিবন্ধী। স্বামী মারা যাওয়ার পর এদের নিয়ে অনেক কষ্টে দিনযাপন করছি। এ ঘটনার বিচার চাই।জানতে চাইলে অভিযুক্ত নুর আহম্মদ বলেন, এ ঘটনায় আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। অকারণে আমাকে দোষারোপ করা হচ্ছে।
বারহাট্টা থানার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আবু সাহেম মোঃ আব্দুর রহমান বলেন ডাক্তারি পরীক্ষায় ঐ মেয়ে ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা প্রমাণিত হয়েছে। মামলাতদন্ত চলছে অভিযুক্তকে গ্রেফতারে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে অভিযান চালানো হয়েছে। তবে গা-ঢাকা দেওয়ায় তাকে ধরা যায়নি। গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। দ্রুত তাকে গ্রেফতার করা হবে।
Leave a Reply