বিশেষ প্রতিনিধিঃ- বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য সিলিকা বালুর একমাত্র ভরসা নেত্রকোণার সীমান্তবর্তী দুর্গাপুর কলমাকান্দা এলাকায়। বিশেষ করে সোমেশ্বরী নদী থেকেই এই বালু উত্তোলন করা হয়। এই বালুমহাল ইজারা দেয়া হয় প্রায় শত কোটি টাকায়। বালু পরিবহনের একমাত্র মাধ্যম দুর্গাপুর বিরিশিরি আন্তর্জাতিক হাইওয়ে সড়ক।এই সড়কে নিয়মবহির্ভূত ভাবে ভেঁজা বালু পরিবহনের কারণে আন্তর্জাতিক মহাসড়ক নষ্ট হওয়ার পথে।শুধু আন্তর্জাতিক সড়ক নয় জেলার অভ্যন্তরীণ সড়কগুলো ভেঁজা বালি পরিবহনের ফলে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে করে সরকারের হাজার কোটি টাকা বিনষ্ট হওয়ার পথে।
সরকারের পক্ষ থেকে বহুবার উদ্যোগ গ্রহণ করলেও নিয়ন্ত্রণ হচ্ছিল না ভেঁজা বালু পরিবহন। গত ২২ সেপ্টেম্বরে নেত্রকোণার নবাগত জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বালুমহাল সরেজমিনে পরিদর্শন করে বালু মহালের ইজারাদারকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন। ভেঁজা বালু পরিবহন করলেই ইজারা বাতিলের হুঁশিয়ারিও দেন তিনি। অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, বালু মহাল থেকে বছরে আয় হয় ৫০/৬০ কোটি টাকা। আর রাস্তা নির্মাণ ও মেরামতে ব্যয় হয় হাজার কোটি টাকা। জনস্বার্থে প্রয়োজনে ইজারা বাতিল করা হবে। ক্ষুদ্র স্বার্থকে সামনে রেখে বৃহৎ স্বার্থকে জলাঞ্জলি দেয়া যাবে না। এসময় জেলা প্রশাসক বালু মহাল ইজারাদারদের ভেজা বালু পরিবহন করলেই জরিমানা ও ইজারাও বাতিলের বিষয়ে জানান।
এদিন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ দিনব্যাপী কর্মসূচীতে নেত্রকোণা জেলার দুর্গাপুর উপজেলা পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি বিরিশিরি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমী, দুর্গাপুর থানা, পৌরসভা, চন্ডিগড় ইউনিয়ন ভূমি অফিস, লক্ষ্মীপুর আশ্রয়ন প্রকল্প, বালুমহাল ইত্যাদি পরিদর্শন করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন দূর্গাপুরের উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা রাজিবুল হাসান ও জেলার অনান্য কর্মকর্তা বৃন্দ।পরিদর্শনকালে তিনি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমি, বিরিশিরি এর নির্বাহী পরিষদের সভায় সভাপতিত্ব করেন ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন ।, উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে তিনি সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে টিন ও চেক বিতরণ করেন, উপজেলার চন্ডিগড় ইউনিয়নের পুরাতন ভূমি অফিস পরিদর্শন করেন ও নবনির্মিত ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। দুর্গাপুর থানা পরিদর্শন করে তিনি অস্ত্রাগার, মালখানা ও বিভিন্ন ডেস্ক ঘুরে দেখেন। বালুমহাল পরিদর্শনকালে তিনি ভেজা বালু পরিবহণ, ওভারলোডেড ট্রাকে বালু পরিবহণ রোধে ইজারাদারদের নির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি লক্ষ্মীপুর আশ্রয়ণ প্রকল্প পরিদর্শনকালে সুবিধাভোগী পরিবারের হাতে ঘরের চাবি হস্তান্তর করেন ও নির্মাণাধীন ঘরগুলো দ্রুততার সাথে ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
Leave a Reply