মোহনগঞ্জ সংবাদদাতা:নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলায় প্রাথমিক শিক্ষক শিক্ষিকারা তাদের পছন্দমত স্কুলে ডেপুটেশনে অত্র উপজেলার মধ্যে ও অন্য উপজেলায় দীর্ঘদিন যাবৎ চাকরি করায় মূল বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়া ব্যাহত হবার খবর পাওয়া গেছে । উপজেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) বলেন, সাবেক কর্মকর্তার আমলে ডেপুটেশনে বদলি করায় মূল বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়া ব্যাহত হচ্ছে ।জানা গেছে, অত্র ১১ অক্টোবর পর্যন্ত মোহনগঞ্জে ৭/৮ জন মূল বিদ্যালয় হতে সংযুক্ত বিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকা হিসেবে চাকরি করার চাঞ্চল্য খবর পাওয়া গেছে । গ্রামের স্কুল থেকে শহরের স্কুলে ৯/১০ বছর যাবত ডেপুটেশনে চাকরি করছেন ।
অত্র উপজেলা থেকে নেত্রকোনা সদরে ২ জন শিক্ষিকা ডেপুটেশনে চাকরি করছেন। খালিয়াজুরী উপজেলা থেকে মোহনগঞ্জ উপজেলার মাইলোড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১ জন চাকুরী করছেন । গ্রাম থেকে ডেপুটেশনে পৌর শহরে ও সুবিধাজনক স্কুলে বেশ কয়েকজন শিক্ষক শিক্ষিকা কিছুদিন চাকরি করে আবার পূর্বের কর্মস্থলে ফিরে গিয়েছেন এমনও প্রমাণ পাওয়া গেছে। এব্যাপারে দৌলতপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমান জানান, মাহমুদা আক্তার খাতুন ৯/১০ বছর যাবত আমার স্কুলে ডেপুটেশনে এসেছেন। আমার স্কুলের সহকারি শিক্ষিকা শেলিনা সুলতানা নেত্রকোনা সদরে ডেপুটেশনে গিয়েছেন । তিনি বলেন এটি উচ্চ পর্যায়ের বিষয় আমার বলার কিছুই নেই । অপরদিকে মানশ্রী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুঃ রানা আসিফ বলেন, আমার স্কুলের একজন সহকারী শিক্ষিকা তিনি মডেলে ডেপুটেশনে গিয়েছেন কত বছর যাবত তা আমার জানা নেই।
বর্তমানে আমার স্কুলে ওই শিক্ষিকার কোন অস্তিত্ব নেই। বিষয়টি তদন্ত করলে আরো কিছু বেরিয়ে আসতে পারে। রুম্পা রানী সাহা পাবই হাজী মোতালিব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে নেত্রকোনা সদরে ডেপুটেশনে গিয়েছেন। উক্ত প্রধান শিক্ষক বলেন, আমার স্কুলের শিক্ষার্থীদের পাঠদানে ব্যাহত হচ্ছে কিন্তু উচ্চ পর্যায়ের বিষয় বলে আমার বলার কিছুই নেই। সহকারী শিক্ষিকা মরিয়ম আক্তার করাচাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে বার্তাকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চাকুরি করছেন । সহকারী শিক্ষিকা রিনা আক্তার পাইকুড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে কাজিহাটী পালেহা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ডেপুটেশনে চাকুরি করছেন । প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম তিনিও বলেন উচ্চ পর্যায়ের বিষয়। সহকারী শিক্ষক ফরিদ আহমেদ পালগাও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে ছয়াশি স্কুলে ডেপুটেশনে আছেন । সহকারী শিক্ষিকা দীপা আক্তার জৈনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে মানারকান্দী স্কুলে ডেপুটেশনে আছেন । মানারকান্দি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সৈয়দা মুন্নি আক্তার বলেন, আমার কাছে ডেপুটেশনের কাগজপত্র আছে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ( ভারপ্রাপ্ত ) বিশ্বজিত সাহা বলেন, আমরা এরকম অনেকেই নিজ কর্মস্থল থেকে সুবিধা জনক কর্মস্থলে ডেপুটেশনে চাকুরী করছেন আমার অফিসে তথ্য রয়েছে । আবার কেউ ফেরত গিয়েছেন এরকম তথ্য আমাদের অফিসে আছ । আমরা উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে ডেপুটেশনের তালিকা প্রণয়ন করছি। সুয়াইর ইউনিয়নের পাবই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা সীমা চৌধুরী ডেপুটেশনে কাজীহাটী পালেহা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চাকুরী করেছেন । কিছুদিন পর সীমা চৌধুরী আবার পালগাও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ফেরত যেতে হয়েছে । একমাত্র এই ডেপুটেশনের শিক্ষিকা অল্প সময়ের মধ্যে পূর্বের কর্মস্থলে ফেরত যেতে হয়েছে । এব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার তাহমিনা খাতুন এর সাথে মোবাইলে কথা হলে তিনি বলেন আমি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব। মূল কর্মস্থলে শিক্ষক-শিক্ষিকা গড় হাজির ও পাঠদান না করে বেতন উত্তোলন করছেন। জনগণে প্রশ্ন সঠিক হাজিরা কোন বিদ্যালয় হবে ? মূল বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়া ব্যাঘাত হচ্ছে , এই অজুহাতে সকল ডেপুটেশন বাতিল করে পূর্বের কর্মস্থলে ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন। পাশাপাশি কার বেআইনি নির্দেশে কাজটি হয়েছে তা তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন ।
Leave a Reply