কলমাকান্দা প্রতিনিধি : নেত্রকোনার কলমাকান্দায় মৃত ব্যক্তিদের ভোটের মাধ্যমে জালিয়াতি করে মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটি গঠনের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও ওই কমিটির নির্বাচনে ভুয়া ভোটার তৈরি করেও নিজেদের পছন্দের লোকদের পক্ষে ভোট দেয়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। কলমাকান্দা উপজেলার আনন্দপুর আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও ম্যানেজিং কমিটির আহŸায়কের বিরুদ্ধে এমন অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আহসানুল কবির নামে এক অভিভাবক এই কমিটি গঠনের এমন অভিযোগ তুলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ¯স্থানীয় প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এতে তিনি ওই অনিয়ম-স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির মাধমে করা কমিটি ¯স্থগিতসহ এ অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন।,, অভিযোগকারী আহসানুল কবির কলমাকান্দা উপজেলার আনন্দপুর গ্রামের নুরুল হক মন্ডলের ছেলে। জানা গেছে, সস্প্রতি ভোটের মাধ্যমে আনন্দপুর আলিম মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে ৩ জন অভিভাবক সদস্য ইতিমধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন। তবে ওই কমিটির নির্বাচনে তাদের নামে অন্যরা ভোট দিয়েছে। এছাড়া মাদ্রাসায় কোন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে না এমন ৪০/৪৫ জনকে জালিয়াতি করে ভোটার বানিয়ে ভোট গ্রহণের ব্যবস্থা করে দেয়া হয়েছে।,, এদিকে অনেক অভিভাবক সদস্যকে ভোটার তালিকায় নাম থাকা সত্তেও তাদের ভোট দিতে দেয়া হয়নি। মুলত মাদ্রাসা থেকে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য অধ্যক্ষ ও আহবায়ক মিলে এ অনিয়ম করেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। ফলে এ অনিয়ম-জালিয়াতীর মাধ্যমে করা কমিটির অনুমোদন বাতিল করাসহ এ কাজে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানান অভিভাবক আহসানুল কবির। তিনি জানান, আমার ছেলে ওই মাদ্রাসায় পড়াশোনা করে।
অথচ ভোটার তালিকায় আমার নাম নেই। আমি প্রার্থী হতে চেয়েছিলাম কিন্তু ভোটার তালিকায় নাম না থাকায় হতে পারিনি। এমন আরও অনেকেই আছেন যাদের সন্তান মাদ্রাসায় পড়ে অথচ তারা ভোটার তালিকায় তাদের নাই নেই। মাদ্রাসা সুত্রে জানা গেছে, আনন্দপুর আলিম মাদ্রাসায় অভিভাবকসহ মোট ভোটার সংখ্যা ৪৯৭টি। গত ৬ অক্টোবর ওই মাদ্রাসায় ভোটের মাধ্যমে অভিভাবক প্রতিনিধি, শিক্ষক প্রতিনিধি, দাতা প্রতিনিধি ও প্রতিষ্ঠাতা প্রতিনিধি নির্বাচিত হন। পরে তাদের সিদ্ধান্তে কমিটির সভাপতি নির্বাচন করা হয়। বর্তমান সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন ¯স্থানীয় লিয়াকত আলী নামে এক ব্যক্তি। এরআগে তিনি কমিটির আহবায়ক ছিলেন। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল মতিন এসব অভিযোগকে মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদীত উল্লেখ করে বলেন, এক-দুইজন অভিভাবক মারা গেছেন। সেটা ভোটার তালিকা প্রকাশের সময় খেয়াল করা হয়নি। তবে মৃতদের নামে ভোট দেখানো হয়নি। আর ভুয়া ভোটারের বিষয়টি একেবারেই মিথ্যা।
কমিটিকে বিতর্কিত করার জন্যই একটি চক্র এসব অভিযোগ তুলছেন। নতুন কমিটি অনুমোদনের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক (মাউশি) অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর পাঠানো হয়েছে। এখনো অনুমোদন হয়ে আসেনি। মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির নির্বাচিত সভাপতি লিয়াকত আলী বলেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সামনেই সুষ্টু নির্বাচন হয়েছে। মৃত ভোটার বা ভুয়া ভোটারের বিষয়টি মিথ্যা। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এমএম ওয়াজেদ তালুকদার বলেন, অভিযোগটি এখনো হাতে পাইনি। পাওয়ার পর তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবুল হাসেম বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply