বিশেষ প্রতিনধি: নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে আবুল খাঁ (৫৫) নামে এক ব্যক্তি নিখোঁজ হওয়ার তিনদিন পর বাড়ির পাশে খালে গলাকাটা লাশ পুতে রাখা অবস্থায় পুলিশ উদ্ধার করে আজ মঙ্গলবার নেত্রকোনা মর্গে লাশ পাঠায়।এ ঘটনায় অভিযুক্ত মেয়ে চিন্তা মনি (১৩), স্ত্রী রুপবাহার (৪২), ও সহযোগী আশিকুর রহমান আবিরকে (১৯) আটক করেছে পুলিশ। এদিকে খুনের শিকার আবুল খাঁর ছেলে আরমান মিয়া (২৪) পালিয়ে গেছে।মোহনগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. রফিকুল ইসলাম মঙ্গলবার বিকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে মঙ্গলবার ভোরে অত্র উপজেলার ৪ নং মাঘান সিয়াধার ইউনিয়নের বড় বেথাম এলাকার সাপমরা খাল থেকে আবুল খাঁর পুঁতে রাখা লাশ উদ্ধার করা হয়।
বিকেলে মোহনগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এস আই) কানাই লাল চক্রবর্তী বলেন, গত শনিবার বিকেলে থেকে নিখোঁজ হন আবুল খাঁ। গতকাল সোমবার পারিবারিক সূত্রে মোহনগঞ্জ থানা পুলিশ নিখোঁজ হওয়ার সংবাদ মৌখিকভাবে শুনতে পান । কয়েক ঘন্টা পর তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি পাওয়া গেছে এরকম একটি সংবাদ শুনতে পান । থানা পুলিশ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে অনুসন্ধান শুরু করে। আবুল খাঁ এর মোবাইল কলের তালিকা থেকে ঘটনার সূত্র খুঁজতে গিয়ে সন্দেহজনকভাবে আবুল খাঁর ছেলে আরমানের সহযোগী মাইজহাট্টী গ্রামের শুকুর আলমের ছেলে আশিকুর রহমান আবিরকে বাহাম এলাকা থেকে গত রাতে প্রথমে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। কৌশলী প্রশ্নের এক পর্যায়ে আবির স্বীকার করে-শনিবার রাতে আবুল হোসেনকে নিজ বাড়িতে গলা কেটে হত্যা করে তার ছেলে আরমান।
এ কাজে মেয়ে চিন্তা মনি ও স্ত্রী রুপবাহার তাকে সহযোগীতা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে । পরে লাশ গুম করার জন্য আমাকে ডেকে আনে আরমান। তার কথা মতো লাশ নিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত কোথায় লুকানো যায় এনিয়ে এদিক সেদিক ছুটাছুটি করি। দুজনে মিলে লাশ পুড়িয়ে ফেলা বা দূরে কোথাও নিয়ে গিয়ে ফেলে দেওয়ার কথা ভাবা হয়। পরে লোকজন দেখে ফেলবে সেই চিন্তায় বাড়ির পাশের সাপমরা খালে কোদাল দিয়ে গর্ত করে গলা পর্যন্ত মাটির নিচে পুতে রাখা হয়। পরে উপরের জমিতে জমে থাকা বৃষ্টির পানি খালে ছেড়ে দেওয়া হয়। যেন লাশ পানিতে তলিয়ে যায়। এসআই কানাই লাল চক্রবতী আরও বলেন, পরে তার দেওয়া তথ্যে মতে রাতভর অভিযান চালিয়ে লাশ উদ্ধার করা হয়।
গলা পর্যন্ত লাশ মাটির নিচে পুতে রাখায় তুলতে গিয়ে অনেক বেগ পেতে হয়েছে। পরে অভিযুক্ত মেয়ে চিন্তা মনি ও স্ত্রী রুপবাহারকে আটক করে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।এদিকে হত্যার প্রধান অভিযুক্ত ছেলে আরমান মিয়া পালিয়ে গেছে।মোহনগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, লাশ উদ্ধার করে মঙ্গলবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা মর্গে পাঠানো হয়েছে। আটকদের জিজ্ঞাবাদ করে আরও তথ্য নেওয়া হচ্ছে। এখনো কোন মামলা হয়নি। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন আছে। এদিকে পালিয়ে যাওয়া আরমানকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। ইহা একটি লোমহর্ষক ঘটনা। এর কয়েক মাস আগে সমাজ সহিলদেও ইউনিয়নে জয়পুর গ্রামে সন্ধ্যাবেলায় ক্ষেতের মধ্যে দায়ের এক কোপে এক যুবককে খুন করে। পুলিশ প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
Leave a Reply