কেন্দুয়া প্রতিনিধি : নেত্রকোণা কেন্দুয়া উপজেলার মনকান্দা এম.ইউ. আলিম মাদ্রাসা এন্ড বি.এম কলেজে ১৩ দিন ধরে ঝুলছে তালা। অধ্যক্ষের অনিয়ম, দুর্নীতি ও সেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে এলাকাবাসী বিক্ষুব্ধ হওয়ায় প্রতিষ্ঠানের পাঠদানসহ যাবতীয় কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। ,
সুত্র জানায়, গত ১৬ জানুয়ারি অধ্যক্ষের নানান অনিয়ম, দুর্নীতি ও সেচ্ছাচারিতায় অতিষ্ঠ হয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ এলাকাবাসী মাদ্রাসায় যায়। ওই সময়ে এলাকাবাসীর সাথে অধ্যক্ষের অসৌজন্যমূলক আচারণের ফলে বিক্ষুব্ধ হয় তারা। এক পর্যায়ে অধ্যক্ষকে অফিস কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখে এলাকাবাসী। খবর পেয়ে কয়েকঘন্টা পর স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও থানার পুলিশের সহায়তা অধ্যক্ষ মুক্ত হন। এর পরে থেকে মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীরা এলেও অধ্যক্ষসহ বেশিরভাগ শিক্ষকরা মাদ্রাসায় যান না। ,
গতকাল রোববার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে মাদ্রাসায় সরজমিনে গেলে দেখা যায়, মাদ্রাসার মূল ফটকে থালা ঝুলছে। কয়েকজন শিক্ষার্থী ও দুইজন শিক্ষক মাদ্রাসা সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। মাদ্রাসার নিরাপত্তা কর্মী জানান, গত ১৬ তারিখের ঘটনার পর মূল ফটক মাঝেমধ্যে খোলা থাকলেও এখন আর খোলা হয় না। কেন খোলা হয় না? জানতে চাইলে জবাবে তিনি জানান,কতৃপক্ষের নির্দেশে সারাক্ষণ তালা দিয়ে রাখি। স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিভাবকরা জানান,ঝামেলা চলছে অধ্যক্ষের সাথে অন্য কোন শিক্ষকের সাথে তো আমাদের কোন ঝামেলা নেই, তাহলে তারা কেন আসে না ? তারা চান দ্রুত প্রতিষ্ঠানটি খোলে দেওয়া হোক,ক্লাশ শুরু হোক। পাঠদান বন্ধ রাখায় শিক্ষার্থীরা মারাত্মকভাবে ক্ষতি হচ্ছে বলেও জানান তারা। ,
মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম জানান, তিনিসহ ৩ জনের বেতনভাতা বন্ধ করে রেখেছেন অধ্যক্ষ। তারা মাদ্রাসায় এলেও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দিতে দেন না অধ্যক্ষ । তাঁর বেতনভাতা বন্ধ ৪ মাস ধরে। জুনিয়র শিক্ষক সুলতানা পারভিনের বেতনভাতা বন্ধ ২০ মাস এবং অফিস সহকারী জাহাঙ্গীর আলমের ২ বছর ধরে বেতনভাতা বন্ধ করে রেখেছেন। তিনি সিনিয়রিটি না মেনে অসদুপায়ে আবু সালেহকে সহকারী অধ্যাপকের বেতন স্কেল না দিয়ে জুনিয়র দুইজনকে সহকারী অধ্যাপক পদে পদায়ন করেছেন। ,
এভাবে অত্যাচার ও নানান কুটকৌশল করে একজন নৈশ্য প্রহরীকে চাকুরী ছাড়তে বাধ্য করেছেন তিনি। তাদেরকেও নিয়ে তিনি এমন খেলা শুরু করেছেন বলেও অভিযোগ করেন সহকারী অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম। স্থানীয়রা আরো বলেন, মাদ্রাসায় অধ্যক্ষের ভাই-বোনসহ নিকটতাত্মীদের চাকুরী দিয়ে স্টাফদের মাঝে একটা সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। তাঁর মতের সামান্যতম বাইরে গেলেই নানান ভোগান্তিতে পড়েন শিক্ষক কর্মচারীরা। তাছাড়া অধ্যক্ষ মাদ্রাসার এক একর দশ শতাংশ জমি বিক্রি করে বিক্রয় লব্ধ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। দীর্ঘদিন যাবৎ পকেট কমিটি দ্বারা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন।,
ওই কমিটিতে অভিভাবক সদস্য যাদের রাখা হয়েছে তাদেরকে তারা চিনেন না। অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। তাঁর এসব অনিয়ম,দুর্নীতি ও সেচ্ছাচারিতা কার্যক্রম বন্ধ করে প্রতিষ্ঠানটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য বলতে গেলে আমাদেরকে তার কক্ষ থেকে বের করে দেয় এবং গালিগালাজ করেন। আমরা তার অপসারণ চাই।,
এবিষয়ে জানতে অধ্যক্ষ এ.এম.এম মুহিব্বুল্লাহ’র মুটোফোনে বারবার কল দিলে তিনি রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভব হয়নি। ভাইস প্রিন্সিপাল মো. নুরুল ইসলাম জানান,উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে আমরা মাদ্রাসায় যাচ্ছি না। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.সেলিম মিয়া বলেন,বিষয়টি দ্রুত নিরসনের জন্য মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বলে দেবেন বলে জানান তিনি।
Leave a Reply