আল-আমিন – মদন প্রতিনিধিঃ নেত্রকোনার মদনের তিয়শ্রী ইউনিয়নে বাস্তবায়িত কাবিখা প্রকল্পে নয়ছয়ের লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রকল্পের বরাদ্দকৃত টাকা আত্মসাৎ করায় সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য মনসুর মিয়ার বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর মঙ্গলবার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২১—২০২২ অর্থ বছরে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা) কর্মসূচির আওতায় সাধারণ প্রথম পর্যায়ে উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড ‘পাহাড়পুর পাকা রাস্তা হতে জাগরণ বর্মণের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা মেরামত’ প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়। উক্ত প্রকল্পে মাটি ভরাটের জন্য ১২.৫০০ মে.টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৫ লক্ষ ১২ হাজার টাকা। অভিযোগে প্রকাশ, ‘পাহাড়পুর পাকা রাস্তা হতে জাগরণ বর্মণের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা মেরামত’ প্রকল্পের বরাদ্দকৃত টাকা নামে মাত্র কাজ করে সিংহভাগ টাকা আত্মসাৎ করেছেন সংশিষ্ট ইউপি সদস্য মনসুর মিয়া।
এ ছাড়া ২০১৯—২০ অর্থ বছরে টি আর কর্মসূচির আওতায় (নন সোলার) প্রকল্পের ১ম কিস্তির প্রকল্প পাহাড়পুর পাকা রাস্তা হতে হরি মন্দির পর্যন্ত রাস্তা পুনঃনির্মাণের জন্য ৫৮ হাজার বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। এর সাথে ওই ওয়ার্ডে (টিআর) প্রকল্পের আরো ১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা বরাদ্দ আত্মসাৎ করায় এলকাবাসী বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগসহ আদালতে মামলা করেন। অদৃশ্য কারণে এগুলো ধামাচাপা পড়ে যাওয়ায় এলাকাবাসীর মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। অভিযোগের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার পাহাড়পুর গ্রামে সরজমিনে গেলে দেখা যায়, পূর্বের টি আর প্রকল্পের একই স্থানে পুণরায় ২০২১/২২ অর্থ বছরের প্রথম পর্যায়ে কাবিখা প্রকল্পের ১২.৫০০ মে.টন চাউল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বরাদ্দের তুলনায় রাস্তাটি অতি ছোট।
রাস্তায় দায়সারা ভাবে সামান্য মাটি কাটা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাহাড়পুর গ্রামের একাধিক ব্যাক্তি বলেন, মনসুর মেম্বার বলেছে এই রাস্তার জন্য ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ পেয়েছে। এখানে এক মাস আগে ৫০ হাজার টাকার মাটি কাটা হয়ে গেছে। গত বছরও এই রাস্তার টাকা আত্মসাৎ করার পর এলাকাবাসী মামলা করেছিল। পরে কিছু মাটি কাটিয়েছিল। পাহাড়পুর রাস্তায় মাটি কাটা ভেকুর পরিচালক রিকন মিয়া মোবাইল ফোনে জানান, আমার ভেকু দিয়ে পাহাড়পুর রাস্তার মাটি কাটা হয়েছে। সেখানে মোট ২৪ হাজার টাকার মাটি কাটিয়েছে প্রকল্প কমিটি। এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য মনসুর মিয়া জানান, প্রকল্পের কাজের একটি বিল পেয়েছি। মাটি কাটার কাজ এখনো চলমান রয়েছে।
জানতে চাইলে তিয়শ্রী ইউপি চেয়ারম্যান ফখর উদ্দিন আহমেদ জানান, পাহাড়পুর গ্রামের রাস্তাটি রিজার্ভ প্রকল্প। কে কাজ করছে তা আমার জানা নেই। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শওকত জামিল জানান, এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বুলবুল আহমেদ বলেন, পাহাড়পুর গ্রামের কাবিখা প্রকল্পের একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। উক্ত প্রকল্পের একটি বিল দেয়া হয়েছে। বাস্তবায়িত প্রকল্প পরিদর্শণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এস/জ
Leave a Reply