বিশেষ প্রতিনিধি:নেত্রকোণা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলার ৭নং গাগলাজুর ইউনিয়নের শ্যামপুর এলাকায় ‘শ্যামপুর কুড়’ নামে একটি সরকারি কুড় (জলাশয়) রয়েছে। জলাশয়টি তিন বছর ধরে ওই এলাকার মৃত আলা মিয়ার ছেলে প্রভাবশালী আতিক মিয়া নামে এক ব্যক্তি বেদখল করে লাখ লাখ টাকার মাছ শিকার করছে বলে স্থানীয় লোকজন জানান। এতে স্থানীয় কয়েক গ্রামের মানুষ মাছ ধরা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই কুড় (জলাশয়) থেকে আতিক মিয়া প্রতি বছর ১৮-২০ লাখ টাকার মাছ শিকার করে বাজারে বিক্রি করে। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিস সূত্রে জানা গেছে, শ্যামপুর কুড়টি শ্যামপুর মৌজায় সরকারি ১নং খাস খতিয়ানভূক্ত এসএ ১০৭২ নং দাগে ৪.৭২ একর ভূমি অবস্থিত। উপজেলার গাগলাজুর ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামে অবস্থিত সরকারি খাস খতিয়ানভূক্ত ‘শ্যামপুর কুড়’ যুগ্ম জেলা জজ ১ম, নেত্রকোণা এর ৩২/২০০৮ সালে আদালতের রায়ে জনগণের মাছ শিকারের স্বার্থে উন্মুক্ত করা হয়।
এলাকাবাসী জানান, শ্যামপুর কুড়টি (জলাশয়) থেকে প্রতিবছর ১৮-২০ লাখ টাকার মাছ বিক্রি করা হয়। পাশের একটি নদী খনন করায় চলতি বছর দ্বিগুণ টাকা মাছ বিক্রি হবে। প্রভাবশালী আতিক মিয়া ক্ষমতার দাপটে তিন বছর ধরে এটি দখল করে লাখ লাখ টাকার মাছ বিক্রি করছে। আদালতের রায়ের পরেও ওই কুড়টি (জলাশয়) উন্মুক্ত হলেও প্রভাবশালী আতিক মিয়ার দখলে রেখেছেন। স্থানীয়দের অনেক অভিযোগ থাকা সত্তে¡ও এতদিনেও স্থানীয় প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নেয়নি। শ্যামপুর গ্রামের মজিবুর রহমান ও লিটন তালুকদার জানান, উন্মুক্ত কুড়টি (জলাশয়) ৩ বছর ধরে ক্ষমতার দাপটে দখল করে রেখেছেন আতিক । প্রশাসন তার কাছ থেকে কুড়টি উদ্ধার করতে পারছে না।
দ্রত এই কুড়টি (জলাশয়) দখল মুক্ত করার দাবি জানান তিনি। উপজেলা ভূমি কার্যালয়ের সার্ভেয়ার মোঃ রেজাউল করিম গত অক্টোবরে কুড়টি (জলাশয়) আতিক মিয়ার কাছ থেকে দখলমুক্ত করতে সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাছে লিখিতভাবে জানান। তিন বছর ধরে আতিক মিয়ার দখলে থাকা কুড়টি (জলাশয়) উদ্ধারে প্রয়োজনে মামলা করারও মতামত দেন। এ বিষয়ে অভিযুক্ত আতিক মিয়ার সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি জানান, তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা। তিনি আরো বলেন, আমি স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে কুড়টি (জলাশয়) লিজে নিয়েছি। মোহনগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, গত শনিবার বিকেলে একটি অভিযোগের ভিত্তিতে শ্যামপুর কুড়ে গিয়ে হাজির হই। সেখানে আতিক মিয়ার স্থাপনা (খলা) ও জলাশয়ে জাল দেখতে পাই।
আতিক মিয়া জানান, তিনি গ্রামবাসীর কাছ থেকে লিজ নিয়েছে। ইহা বেআইনী বিধায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করে সরকারি নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দেই। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ছাব্বির আহম্মেদ আকুঞ্জি বলেন, ওই কুড়টি (জলাশয়) আদালতের রায়ে এলাকাবাসীর অনুকূলে উন্মুক্ত ঘোষণা হয়েছিল। এখন কুড়টি (জলাশয়) নিয়ে ঝামেলা হয়েছে। আদালতে মামলাও হয়েছে। ঝামেলার প্রেক্ষিতে সরকারের অধীনে আনার জন্য আদালতের মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
Leave a Reply