বিশেষ প্রতিনিধি : নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের সমাজ সহিলদেও ইউনিয়নের হাছলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তায়জুল ইসলামের বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় কিছু লোকজন।মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে এক স্মারকলিপি প্রদান করেন। তিনি ওই সময়ে উপস্থিত লোকজনে উদ্দেশ্যে বলেন , নিয়ম অনুযায়ী তদন্ত করে সত্যতা পেলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে । তিনি আরো বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্তের কার্যক্রম শুরু হবে ।
স্মারকলিপি প্রদানের পর উপজেলা পরিষদ চত্বরে ওই প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে শতাধিক লোকজন মানববন্ধন করেন। এসময় স্কুলের ১০/১২ জন শিক্ষার্থীও উপস্থিত ছিলো। বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সভাপতি এ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন এতে বক্তব্য দেন।উপজেলা পরিষদে অবস্থান করলে সেনাবাহিনী সদস্য ও পুলিশ টিম গিয়ে হাজির হন । স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে মানববন্ধনকারী লোকজনকে পরিষদ চত্বর ত্যাগ করার আহ্বান জানান। তবে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের দাবি- ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের কারণে কিছু লোক আমার বিরুদ্ধে লেগেছে।
সরকার পতনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে তারা মিথ্যা অভিযোগ তুলে আমাকে সরিয়ে দিতে চাইছে। নিজের জায়গা দিয়ে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেছি। তবে তাদের অভিযোগ তদন্ত হোক প্রমাণিত হলে স্বেচ্ছায় চলে যাব। অভিযোগে বলা হয়েছে – প্রধান শিক্ষক তায়জুল ইসলাম আত্মীয়করণ করে স্কুল পরিচালনা করে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতি করেছেন। তার বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অভিযোগ রয়েছে বলে তারা অভিযোগে উল্লেখ করেন।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৮ সালে উপজেলার হাছলা গ্রামে এক একর ২৫ শতাংশ জায়গার ওপর হাছলা উচ্চ বিদয়ালয়টি স্থাপিত হয়। এর জমি দাতা ও প্রতিষ্ঠাতা বর্তমান প্রধান শিক্ষক তায়জুল ইসলাম। পরে ২০০৪ সালে বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত হয়। বিদ্যালয়ে চারতলা একটি একাডেমিক ভবন রয়েছে।
বিদ্যালয়টিতে ১২ জন শিক্ষক ও ৭ জন কর্মচারী রয়েছে। এতে শিক্ষার্থী রয়েছে ৩৮৭ জন।বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাহফুজুর রহমান বলেন, প্রধান শিক্ষক তায়জুল ইসলাম নিজের জায়গা দিয়ে শ্রম ঘাম দিয়ে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেছেন। তবে শুরু থেকেই ভগ্নিপতি ও সহকারী শিক্ষক বজলুর রহমান ঠাকুরের সাথে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। এখন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তারা সুযোগ কাজে লাগিয়ে প্রধান শিক্ষককে সরিয়ে দিতে চাইছেন। অভিযোগ থাকলে তদন্ত হোক। দোষী হলে প্রচলিত নিয়মে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজওয়ানা কবির বলেন, এলাকার লোকজন আমার কাছে এসে একটা অভিযোগ জমা দিয়েছেন। অভিযোগগুলো তদন্ত করা হবে। পরে সেই তদন্তের তথ্যের কাগজপত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আসলে তদন্ত ছাড়া কারো বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। তাদের (অভিযোগকারীদের) দাবি অনুযায়ী একজন সহকারী শিক্ষক বজলুর রহমান ঠাকুরকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আপাতত প্রধান শিক্ষক ছুটি নিয়েছেন।
Leave a Reply