নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ পৌর শহরে মোহনগঞ্জ মহিলা কলেজের এক প্রভাষক যথাযথ অনুমতি না নিয়েই ভারত ভ্রমণ করেছেন। বিষয়টি নিয়ে এক নারী অভিযোগ করেছেন শিক্ষা বিভাগের মহা পরিচালক বরাবরের । ওই প্রভাষকের নাম অখিল কুমার সরকার। তিনি ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক । গত ১২ অক্টোবর তিনি ১৫ দিনের নৈমিত্তিক ছুটির আবেদন করেই ভারত ভ্রমণে যান অখিল কুমার সরকার । তবে ১৫ দিনের স্থলে তিন দিন অতিরিক্ত ভ্রমণ শেষে ১৮ দিন পর দেশে ফিরে কলেজে যোগদান করছেন ।
তবে শিক্ষা বিভাগের নিয়মানুযায়ী তার ছুটি মঞ্জুর হয়নি।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নিয়মানুযায়ী এমপিওভুক্ত কলেজের কোন শিক্ষক বিদেশে যেতে হলে তাঁর আবেদনটি কলেজের গভর্নিং বডির সভার মাধ্যমে রেজ্যুলেশন আকারে অনুমোদন নিতে হয়। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তপক্ষকে এ বিষয়ে চিঠি দিয়ে অবহিত করতে হয়। এদিকে প্রভাষক অখিল কুমার সরকার বিদেশ ভ্রমণের ছুটির বিষয়টি জানেন না বললেন কলেজের গভর্নিং বডির বর্তমান সভাপতি ও সাবেক সভাপতি । প্রভাষক অখিল কুমার সরকার এর বিরুদ্ধে বৈধ অনুমতি ছাড়া কয়েকবার ভারতে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ মো. মুখলেছুর রহমান আকন্দের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অখিল সরকারের ছুটির আবেদন দেখান ৪ নভেম্বর /২০২৪ ইং তারিখ ।
অসম্পূর্ণ আবেদন টি আমাদের প্রতিনিধি দেখতে পান । এতে দেখা গেছে, বিশেষ প্রয়োজনে ভারত ভ্রমণে যাওয়ার জন্য অধ্যক্ষ বরাবর ১৫ দিনের নৈমিত্তিক ছুটির আবেদন করেন অখিল কুমার সরকার। আবেদনপত্রে অধ্যক্ষের একটি স্বাক্ষর থাকলেও এতে কোন অনুমোদন বা সিল নেই। ছাড়পত্র ও গভর্নির বডির অনুমোদন বা রেজ্যুলেশনের কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেননি তিনি। অধ্যক্ষ বলেন, কোন শিক্ষক বিদেশ যেতে হলে সেই ছুটি দেওয়ার এখতিয়ার অধ্যক্ষের রয়েছে। তাই নিজ ক্ষমতাবলে তিনি ওই শিক্ষককে ছুটি দিয়েছেন।
পরে সেটি গভর্নিং বডির সভায় অনুমোদন করে নিবেন। বিদেশ ভ্রমণের আলাদা কোন ছুটি নেওয়ার প্রয়োজন নেই বলে তিনি দাবি করেন। তিনি আরো জানান, ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত ছুটির আবেদন টি গভর্নিং বডির অনুমোদন হয়নি ।এ বিষয়ে মোহনগঞ্জ মহিলা কলেজের গভর্নিং বডির সাবেক সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) রেজওয়ানা কবির বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। আমাদের প্রতিনিধি কে বলেন ঘটনাটি এই প্রথম আপনার কাছ থেকে জানলাম। কোন প্রভাষক আমার কাছ থেকে বিদেশ যাওয়ার ছুটি নেননি।
কলেজের গভর্নিং বডির সদ্য মনোনিত সভাপতি গোলাম রাব্বানী পুতুল বলেন, এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কলেজ কর্তৃপক্ষ আমাকে জানায়নি। তবে অনিয়ম প্রমাণিত হলে বিভাগীয় নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।প্রভাষক অখিল কুমার সরকার বলেন, ভারতে আমার মা ভীষণ অসুস্থ থাকায় পুজার ছুটিতে দেখতে গিয়েছিলাম। তাড়াহুড়ো করে আবেদন লিখতে গিয়ে ভুলে আবেদনে নৈমিত্তিক ছুটির কথা লিখে ফেলেছি। ১৫ দিনের জায়গায় ১৮ দিন পরে এসেছি।
অর্থাৎ তিন দিন অতিরিক্ত ভারতে অবস্থান করেছি। তিনি এক পর্যায়ে বলেন, আমার ভুল হয়েছে। আগামীতে গেলে সঠিক নিয়ম অনুযায়ী যাব।বুধবার (১৩ নভেম্বর ) জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু সাইদ বলেন, এমপিওভুক্ত কলেজের কোন শিক্ষক বিদেশে যাওয়ার অনুমতি অধ্যক্ষ দিতে পারেন না। আবেদনটি গভর্নিং বডির সভায় অনুমোদন করে রেজ্যুলেশন আকারে অনুমোদন দিতে হবে। আর নৈমিত্তিক ছুটিতে বিদেশ যাওয়ার নিয়ম নেই। একসাথে ১৫ দিনের নৈমিত্তিক ছুটি দেওয়ার নিয়ম নেই।অপরদিকে জানা যায়, প্রভাষক অখিল কুমার সরকারের অবৈধ ভারত ভ্রমণের বিষয়ে ১০ নভেম্বর একজন নারী শিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালক বরাবরে আবেদন করেছেন। আবেদনের অনুলিপি দিয়েছেন মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা, শিক্ষা উপদেষ্টা সহ বিভিন্ন দপ্তরে ।
Leave a Reply