নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ পৌর শহরসহ গ্রাম পর্যন্ত আশঙ্কাজনক ভাবে চুরির ঘটনা বেড়েই চলছে। প্রতি রাতেই কোন না কোন গ্রামে কৃষকের বাড়িতে ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চুরি হচ্ছে।
রোববার রাতেও পৌর শহরের বার্ত্তারগাতী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চুরি হয়। সেখানে থেকে সংঘবদ্ধ চোরেরা ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ২৭টি বেঞ্চ থেকে কাঠের তক্তা রেখে লোহার ফ্রেম নিয়ে যায়। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা উপজেলার জৈনপুর গ্রামে। সেখানে মানুষের রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। সেখানে চোরের ভয়ে কৃষকরা তাদের গরু তালা দিয়ে রাখতে হচ্ছে।
উপজেলার জৈনপুর এবং পৌর শহরের বার্ত্তারগাতী ও দেওথানের একাংশসহ বিভিন্ন স্থানে চুরি ঠেকাতে মানুষ রাত জেগে পাহারা দিচ্ছে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মোহনগঞ্জের জৈনপুরে গত এক মাসের ব্যবধানে অসংখ্য চুরি সংঘটিত হয়।
জৈনপুর গ্রামের হতদরিদ্র কৃষক গঙ্গাচরণ দত্তের এক লাখ টাকা দামের গরু চুরি হয়। একই সময়ে শ্যামল তালুকদারের নব্বই হাজার টাকা দামের অপর আরেকটি গরু চুরির ঘটনা ঘটে। এতে ওই গ্রামের দুই কৃষক এখন নিঃস্ব।
এছাড়াও সম্প্রতি জৈনপুর গ্রামের দেবব্রত চন্দ্র দত্তের সত্তর হাজার টাকার স্বর্ণালংকার, লিটন দত্তের নগদ পনের হাজার টাকা সহ দুইটি মোবাইল, অন্তর দত্তের একটি মোবাইল, নিয়তি করের একটি মোবাইল, রঞ্জিত দত্তের নগদ ত্রিশ হাজার টাকা, মোবাইল ও এগার আনা স্বর্ণ, বাবুল কর, স্বাক্ষর তালুকদার, লক্ষণ সরকার, নেপাল কর, সুপ্রিয় দত্ত, কাচু তালুকদার, হৃদয় বণিক, শুকলব কর, অখিল দত্ত, পলাশ তালুকদার, কণিকা সরকার ও সবুজ সরকারের একটি করে মোবাইল এবং বীরেন্দ্র সরকারের ছয় হাজার টাকা, বিলাশ দত্তের আটহাজার পাঁচশত টাকা, সুবোধ দত্তের স্বর্ণালংকার, মাহিন্দ্র করের এগার হাজার টাকা ও তাপস সরকারের চার হাজার টাকা চুরি হয়। নিরুপায় হয়ে গ্রামবাসী পাহারাসহ চোরের উপদ্রব থেকে প্রতিকারের জন্য গত বৃহস্পতিবারে কালিমন্দিরে হিন্দু সম্প্রদায়ের এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
নেত্রকোণা জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন দপ্তরে ডাক রেজিষ্ট্রি যোগে গত ২৮ মে ১শ ২১জন স্বাক্ষরিত আবেদন করেছেন। ওই আবেদনে স্বাক্ষরকারী জৈনপুরের দেবব্রত চন্দ্র দত্ত বলেন,
চুরি ঠেকাতে আমরা পুলিশের সহযোগিতা চাই। এসব চুরির বিষয়ে তেতুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মোহনগঞ্জ থানার পুলিশকে অবহিত করেছি। বার্ত্তারগাতী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ইদ্রিছ আলী জানান, আমার বিদ্যালয়ের ২৭টি বেঞ্চ থেকে কাঠের তক্তা রেখে লোহার ফ্রেম চুরি হয়েছে। এছাড়া গত মাসের ২৯ তারিখ আমার স্কুলের ১০টি বেঞ্চের লোহার ফ্রেম চুরি হয়েছিল এবং মোহনগঞ্জ থানায় ৩০ এপ্রিল একটি লিখিত অভিযোগ করেছিলাম। মোহনগঞ্জ থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, বার্ত্তারগাতী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চুরির ঘটনায় অভিযান চলছে। জৈনপুরের ঘটনাসমূহ পুলিশ সরেজমিনে পরিদর্শন করেছে এবং সর্বোচ ব্যবস্থা নেয়া হবে তিনি আমাদের প্রতিনিধিকে আশ্বস্থ করেছেন।
Leave a Reply