সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:২২ পূর্বাহ্ন

কেন্দুয়ায়  সেই অনুপস্থিত মাদ্রাসা শিক্ষকরা পেলেন বেতনভাতা অতঃপর

রিপোর্টারের নাম:
  • আপডেট : সোমবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ১৭০ পঠিত

কেন্দুয়া প্রতিনিধি : নেত্রকোণার কেন্দুয়ায় মনকান্দা এম.ইউ. আলিম মাদ্রাসা এন্ড বি.এম কলেজ অধ্যক্ষের সাথে দ্বন্দ্বের ফলে গত জানুয়ারি মাসে প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে টানা ১৩ দিন উধাও ছিলেন অধ্যক্ষ ও তাঁর পন্থী শিক্ষকরা। সেই অনুপস্থিত শিক্ষকরা গত জানুয়ারী মাসের বেতন ভাতা উত্তোলন এবং অধ্যক্ষের ডাকে সাড়া না দিয়ে প্রতিদিন মাদ্রাসা উপস্থিত থাকা ৩ শিক্ষকের জানুয়ারি মাসের বেতনভাতা বন্ধ করায় ক্ষোভে ফুঁসেছেন এলাকাবাসী ও বঞ্চিত শিক্ষকরা। ,

এনিয়ে মাদ্রাসার ৬জন শিক্ষক কর্মচারীর বেতন-ভাতা বন্ধ করলেন অধ্যক্ষ। এঘটনার প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে  গত রোববার পৃথক ভাবে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। অভিযোগে বঞ্চিত শিক্ষকরা বলেন, ৩ জন শিক্ষক কর্মচারীর বেতন ভাতা বন্ধ রাখা, জমি বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ এবং গোপনীয়ভাবে পকেট কমিটির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করাসহ আরও কতিপয় অভিযোগকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসীর সাথে অধ্যক্ষের এক উদ্ধত্যপূর্ণ ঘটনা ঘটে এবং সত্যি বলতে অধ্যক্ষ  এলাকাবাসীর সাথে অত্যন্ত অন্যায় আচরণ করেন।,

বিবেকতাড়িত হয়ে আমরা কয়েকজন এই সত্য স্বীকার করার অপরাধে আমাদেরকে কোন কিছু না জানিয়ে বিধি বহিঃর্ভূত ভাবে গত জানুয়ারী মাসের আমাদের বেতন বন্ধ করে দিয়েছেন। অপর দিকে এলাকাবাসী অভিযোগে বলেন,মাদরাসার অধ্যক্ষ এএমএম মুহিবুল্লাহ’র স্বেচ্চাচারিতা, দুর্নীতি ও উদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের প্রতিবাদ ও সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক সুবিচার চেয়ে আবেদন করি। ,

পরবর্তীতে দেখা যায় ১৩/১৪ দিন প্রতিষ্ঠনের মূল গেইটে তালা দিয়ে অধ্যক্ষসহ বেশ কিছু সংখ্যক শিক্ষক প্রতিষ্ঠানে যায়নি। আর বেশ কয়েকজন শিক্ষক ও অত্র প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রী প্রতিষ্ঠানে আসলেও মূল গেইটে তালা বদ্ধ থাকায় প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করতে পারেনি। উক্ত ঘটনাটি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যপক প্রচারিত হওয়ায় উপজেলা নির্বাহীর নির্দেশক্রমে কেন্দুয়া উপজেলাধীন সকল মাদরাসা প্রধানগণের মধ্যস্থতায় পাঠদানের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ,

কতিপয় যে সকল শিক্ষকগণ বন্ধ রাখা অবস্থায় নিয়মিত প্রতিষ্ঠানে এসেছেন তাদেরকে বাদ দিয়ে অন্য সকল শিক্ষক ও কর্মচারীদের পূর্ণ মাসের (পরিকল্পিত বন্ধের দিনসহ) বেতন ভাতাদি উত্তোলণ করেছেন। যাহা তাঁর স্বেচ্চাচারিতা ছাড়া আর কিছুই নহে। অধ্যক্ষ তাঁর নিজ দূর্নীতি ও অপকর্মগুলোকে ভিন্নদিকে প্রবাহিত করার অপচেষ্টায় এলাকায় দুরভিসন্ধিমূলক উত্তাপ ছড়ানোর পরিকল্পনা অব্যাহত রেখেছেন। যাহা চাকুরীবিধির লংঘন। এব্যাপারে জানতে অধ্যক্ষ এএমএম মুহিবুল্লাহ’র মুটোফোনে যোগাযোগ করা হলে ফোন বন্ধ থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।,

মাদ্রাসা গভর্নিং বডির সভাপতি সঞ্জু রহমান জানান,গ্রামের লোকজনের সাথে শিক্ষকদের একটা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। এসময় কয়েকদিন মাদ্রাসায় কোন শিক্ষক আসছে আর আসছে না। শিক্ষকদের তেমন দোষ ছিল না। তাই বেতন ভাতা দেওয়া হয়েছে।  উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ও এসিল্যান্ড মো.রাজিব হোসেন জানান,বেতন বঞ্চিত শিক্ষকদের ও এলাকাবাসী পৃথক দু’টি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তে সত্যতা পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। ,

উল্লেখ্য, গত ৩০ জানুয়ারি ৭ এর পাতায় মনকান্দা এম.ইউ.আলিম মাদ্রাসা এন্ড বি.এম কলেজের অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে “অধ্যক্ষের সঙ্গে গ্রামবাসীর দ্বন্দ্ব ১৩ দিন ধরে মাদ্রাসা বন্ধ” শিরোনাম দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলে টনক নড়ে প্রশাসনের। ওইদিন উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে উপজেলার সকল আলীয়া মাদ্রাসা সুপার ও অধ্যক্ষগণ ওই মাদ্রাসা গিয়ে তালা খুলেন এবং পরেরদিন থেকে শ্রেণি কার্যক্রমের স্বাভাবিক হলেও অধ্যক্ষ এএমএম মুহিবুল্লাহ মাদ্রাসায় যান না।

শেয়ার করুন:

এ জাতীয় আরও সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এক ক্লিকে বিভাগের খবর

© All rights reserved © 2021 dainikjananetra
কারিগরি সহযোগিতায় পূর্বকন্ঠ আইটি