শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০১:২৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কেন্দুয়া ডিগ্রি কলেজে সকালে অধ্যক্ষ নিয়োগ আদেশ বিকেলে বাতিল খালিয়াজুরীর প্রকাশনাথ পাবলিক স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত নেত্রকোণায় প্রজনন স্বাস্থ্য সচেতনতা বিষয়ক সভা অনুষ্ঠিত খালিয়াজুরীতে নব নিযুক্ত ইউএনও যোগদান উপলক্ষে মতবিনিময় খালিয়াজুরীতে বিএনপি’র সম্মেলনে সভাপতি স্বাধিন-সম্পাদক কেষ্টু কলমাকান্দায় ভর্তুকির হারভেস্টার বল প্রয়োগে অন্য উপজেলায় প্রদানের অভিযোগ কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মোহনগঞ্জে সরকারি কর্মচারী ক্লাবের সভাপতি মিজান, সম্পাদক কালাম নেত্রকোণার মিতালী সংঘের ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট শুরু খালিয়াজুরি উপজেলা বি.এন.পির সম্মেলন ২৮ জানুয়ারি মোহনগঞ্জে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মাঝে মুরগী ও হাঁসের খাদ্য বিতরণ

মোহনগঞ্জে স্কুল ছাত্রীকে গলা-ঠোটে ছুরিকাঘাত

রিপোর্টারের নাম:
  • আপডেট : বুধবার, ২৬ জুন, ২০২৪
  • ২৬২ পঠিত

মোহনগঞ্জ প্রতিনিধি : নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে ঘরে ঢুকে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টা চালায় এক বখাটে। তবে বাধা দেয়ায় ওই ছাত্রীর গলা ও ঠোটে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। ইউএনও উক্ত স্কুলের প্রধান শিক্ষককে অবিলম্বে ছাত্রীর বিষয়ে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেন। পরে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ছুরিকাঘাতে ওই ছাত্রীর গলা, ঠোট ও জিহ্বার কিছু অংশ কেটে গেছে।

এতে কথা বলতে পারছে না ওই ছাত্রী। ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর উপজেলার ৬ নং সুয়াইর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের ভাটিয়া (মাঝি পাড়া) গ্রামের মেয়ে। সাগরিকা দাস স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। তিন বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে সবার বড়, বাবা অঞ্জন দাস পেশায় জেলে। বাড়ির পাশে হাওরে মাছ ধরে বিক্রি করেই পরিবারের ভরনপোষণ করেন। আর অভিযুক্তের নাম উত্তম বিশ্বাস (২১)। তিনি উপজেলার ভাটিয়া গ্রামের নিরঞ্জন বিশ্বাসের ছেলে। উত্তম বিবাহিত বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। গত মঙ্গলবার মোহনগঞ্জ থানার ওসি মো. দেলোয়ার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে গত রোববার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে নিজ ঘরে সাগরিকা দাসকে ধর্ষণ চেষ্টা চালায় উত্তম। এসময় বাধা দেওয়ায় সাগরিকার গলা ও ঠোটে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় উত্তম।এ ঘটনায় সাগরিকা দাসের মা অঞ্জনা রানী দাস বাদী হয়ে উত্তমের বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টা ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।মামলার অভিযোগ, পুলিশ ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উত্তম বিশ্বাস এলাকার বখাটে প্রকৃতির ছেলে। বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও এলাকার বিভিন্ন মেয়েদের উত্যক্ত করে। প্রতিবেশী স্কুলে যাওয়ার পথে নানা কুপ্রস্তাব দিত। এতে রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয় উত্তম। রোববার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে সাগরিকার বাবা-মা বাড়ির পাশে বিলে জাল দিয়ে মাছ ধরতে যায়।

এসময় ঘুমে ছিল সাগরিকা ও তার ভাই-বোনেরা। সেই সুযোগে ছুরি নিয়ে ঘরে ঢুকে  গলায় ছুরি ধরে ধর্ষণ চেষ্টা চালায়। বাধা দিলে সাগরিকার গলায় ছুরি দিয়ে আঘাত করে। এতে ধস্তাধস্তি শুরু হলে একই সময়ে মেয়ের ঠোটেও ছুরিকাঘাত করে উত্তম। ধস্তাধস্তির শব্দে মেয়ের ভাই-বোনদের ঘুম ভেঙে গেলে তারা চিৎকার দেয়। চিৎকার শুনে তার বাবা-মা ছুটে আসলে উত্তম ছুরি ফেলেই পালিয়ে যায়। পরে এলাকাবাসী সহযোগিতায় সাগরিকাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। ছুরিকাঘাতে তার ঠোট ও জিহ্বা কেটে যায়। এতে ঠোটে ৬টি ও গলায় দুটি সেলাই লেগেছে।

এতে বর্তমানে কথা বলতে পারছে না সাগরিকা। এ ঘটনায় রোববার সাগরিকা দাসের মা অঞ্জনা রানী দাস বাদী হয়ে থানায় উত্তমের বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টা ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করেন। মঙ্গলবার অভিযোগটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়। ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা অঞ্জনা রানী দাস সরেজমিনে মঙ্গলবার বিকালে বলেন, উত্তম একটা চরিত্রহীন ছেলে। আগে আমার ভাসুরের মেয়েকে উত্যক্ত করত। কিছুদিন ধরে আমার মেয়েকে উত্যক্ত করা শুরু করেছে। ভোরে আমরা মাছ ধরতে গেলে সেই সুযোগে ঘরে ঢুকে ধর্ষণ চেষ্টা চালায়। বাধা দেওয়ায় গলা ও ঠোটে ছুরিকাঘাত করেছে। আমি এ ঘটনার ন্যায় বিচার চাই। গরীব মানুষ মাছ ধরে বিক্রি করে সংসার চালাই। কষ্ট করে মেয়েটাকে পড়াচ্ছি। মেয়েটার পড়াশোনা যেন চালিয়ে যেতে পারে সেই ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই।

ঘটনার পর থেকে প্রভাবশালীরা চাপ দিচ্ছে ঘটনা সালিশে শেষ করতে। এ নিয়ে ভয়ে আছি। একই কথা বলেন সাগরিকার বাবা অঞ্জন দাস। তিনি বলেন, অনেকে আপোষের জন্য চাপ দিচ্ছিল। ভয়ে রোববার মেয়েটাকে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নিয়ে এসেছি। আমরা গরীব মানুষ এতকিছু বুঝি না, এই ঘটনার বিচার চাই।  এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য সেবক সরকার বলেন, ভোরেই মেয়ের বাবা-মা বিষয়টা আমাকে জানায়। আমি  প্রথমে মেয়েটার (সাগরিকা) চিকিৎসা করাতে তাদের বলি। পরে আসামি পক্ষ আমার কাছে এসে বলে স্থানীয়ভাবে সালিশের মাধ্যমে বিষয়টি শেষ করার জন্য।

বিষয়টি সালিশের মাধ্যমে শেষ করার উদ্যোগ নিলেও মেয়ের বাবা-মা তা মানেনি। তারা  আইনের আশ্রয় নিবে জানায় । তারা  মঙ্গলবার মামলা দায়ের করেছে। এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিলাল মিয়া জানান, উত্তমের বিরুদ্ধে এমন আরো অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই। তিনি হাসপাতালে আহত  ছাত্রীকে দেখতে যান। তবে সালিশে বিষয়টি শেষ করার  কথা অস্বীকার করেন তিনি।

মোহনগঞ্জ থানার ওসি মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে আসামি গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেজওয়ানা কবির বলেন,  ছাত্রী বিষয়ে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে নির্দেশ দিয়েছি । এ বিষয়ে দ্রুত যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

শেয়ার করুন:

এ জাতীয় আরও সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এক ক্লিকে বিভাগের খবর

© All rights reserved © 2021 dainikjananetra
কারিগরি সহযোগিতায় পূর্বকন্ঠ আইটি