বিশেষ প্রতিনিধিঃ নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়ার জয়কা গ্রামের কাজী হিজবুল্লাহ কাফী নামে এক ব্যক্তির লিখিত অভিযোগে জানা যায় জেলার কেন্দুয়া উপজেলার মাসকা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রেজাউল হাসান একাডেমিক শিক্ষাগত যোগ্যতার অবৈধ সনদ দাখিল করে স্থানীয় জয়কা সাতাশি উচ্চ বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি হওয়ার পাঁয়তারা করছেন ।
এ ঘটনায় গত ৪ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর স্থানীয় জয়কা গ্রামের কাজী হিজবুল্লাহ কাফী নামে এক ব্যক্তি লিখিত অভিযোগ করেন।
লিখিত এ অভিযোগের অনুলিপি জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কর্মকর্তাকেও দেয়া হয়েছে। অভিযোগের বরাতে জানা গেছে, মাসকা ইউনিয়নের জয়কা সাতাশি উচ্চ বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি মনোনয়নের জন্য প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক তপন চন্দ্র সরকার গত ২৩ জানুয়ারি জেলা প্রশাসক বরাবর স্থানীয় ৩ জন শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রেজাউল হাসান (বিএ, অনার্স), উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম আব্দুল ওয়াদুদ ভূঞা (কামিল, এমএ) ও জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি আব্দুর রাশিদের (এমবিএস) নামের প্রস্তাব পাঠান।
তাদের ৩ জনের মধ্যে রেজাউল হাসানের বিএ, অনার্স পাসের সনদটি অবৈধ এবং তা জাল জালিয়াতি করে নিয়েছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, রেজাউল হাসান দি ইউনিভার্সিটি অফ কুমিল্লা, বাংলাদেশ নামক প্রতিষ্ঠান হতে ২০২১ সালে পরীক্ষা দিয়ে ২০২২ সালে বিএ, অনার্স উত্তীর্ণ হওয়ার সনদটি অর্জন করেন। কিন্তু নানা রকম অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগে ২০০৬ সালেই ওই প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ ঘোষণা করে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন। বন্ধ ঘোষণার পর কেউ্ ঐ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সনদ গ্রহণ করলে তা অবৈধ বলেও সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রের তথ্যমতে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
জয়কা সাতাশি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তপন চন্দ্র সরকার বলেন, আমরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ এডহক কমিটির সভাপতি মনোনয়নের জন্য ৩ জনের নামের প্রস্তাবনা জেলা প্রশাসক বরাবর পাঠিয়েছি। সনদপত্র যাচাই বাছাইয়ের কাজ আমাদের না। এটা জেলা প্রশাসন করে থাকে। এ ব্যাপারে রেজাউল হাসান বলেন, আমার সনদপত্রে কোনো ঝামেলা নেই। সনদপত্রটি যে সঠিক- এ সংক্রান্ত সব কাগজপত্র আমার কাছে আছে। এছাড়া অনলাইনে সার্চ দিলেও সনদটি যে সঠিক তা জানা যাবে। আর জেলা প্রশাসন তো সনদপত্রটি যাচাই করেই বোর্ডে পাঠিয়েছে। এরপরও যদি বোর্ড মনে করে তা হলে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে তা যাচাই করতে পারে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) শামীমা ইয়াসমীন বলেন, আমাদের এখানে অসংখ্য প্রস্তাবনা আসছে। তাই আমাদের পক্ষে সবগুলো যাচাই করা সম্ভব হয় না। সনদসহ সব কাগজপত্র মূলত প্রধান শিক্ষকরাই দেখে দেন। অভিযোগের বিষয়টি মৌখিকভাবে শুনেছি। তবে অভিযোগসহ প্রয়োজনীয় তথ্যাদি পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply